Talent Stationary
icon 0
icon

Your order.

There are no items in your Cart.

প্রি মা!

November 08, 2023 03:05:41 PM
Cover

মানসিক স্ট্রেস কমাতে মাকে ফোন করার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি?

ড. লেন স্ত্রাথার্ন, বর্তমানে বেইলর কলেজ অব মেডিসিন এবং টেক্সাস চিলড্রেন্স হসপিটালে পিডিয়াট্রিকসের একজন অধ্যাপক। স্ট্রেস বা মানসিক চাপে ভোগা, প্রচন্ড অস্থির লাগা, একাকিত্ব অনুভব করা, পানিতে তলিয়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি হওয়া, চারপাশের সবকিছু অর্থহীন লাগা, জীবনটা একেবারেই মূল্যহীন মনে হওয়া ইত্যাদি বিষয়ের কারণ এবং নিরাময় নিয়ে তিনি সহ আরো কয়েকজন গবেষক ৭ থেকে ১২ বছর বয়সী ৬১ জন মেয়েকে গবেষণার জন্য বেছে নেয়। তাদের মানসিক স্ট্রেস বাড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে অজানা অচেনা দর্শকদের সামনে তাদেরকে বিভিন্ন কৌশলী গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে দেয়া হয়। তাদের মনে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্ট্রেস ঢুকিয়ে দেয়ার পর, তাদেরকে তিনটি পৃথক দলে বিভক্ত করা হয়। তারপর প্রতিটি দলের সকল সদস্যের স্ট্রেস সমস্যা দূর করতে খুবই সাধারণ একটি নিরাময় প্রক্রিয়া বেছে নেয় কিন্তু তারা অভাবনীয় ফলাফল লাভ করে। তারা নিরাময়ের জন্য কোনো মেডিসিন কিংবা কোনো থেরাপির দ্বারস্থ না হয়ে স্রেফ 'মা' কে বেছে নেয়!

প্রথম দলকে তাদের মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়, যাতে করে মায়ের সাথে তাদের দেখা সাক্ষাত ঘটে, আলিঙ্গন করে ভালোবাসার বিনিময় হয়;
দ্বিতীয় দলকে ফোন দেয়া হয়, যাতে তারা তাদের মায়ের সাথে ১৫ মিনিট করে কথা বলতে পারে;
তৃতীয় দলকে একটি আবেগ-নিরপেক্ষ ভিডিও দেখতে দেয়া হয়।

এরপর গবেষকরা প্রতিটি মেয়ের শরীর থেকে তরল নমুনা সংগ্রহ করেন, যাতে করে তাদের শরীরের অক্সিটোসিন ও স্ট্রেস হরমোন কোর্টিসলের মাত্রা পরিমাপ করা যায়। গবেষকরা কিছু বিস্ময়কর ফলাফল পান। তারা দেখেন, যারা মায়ের সাথে শারীরিক বা ফোনের মাধ্যমে সংযোগের সুযোগ পায়নি, তাদের মানসিক স্ট্রেসের সবচেয়ে কম নিঃসরণ ঘটেছে। কিন্তু যারা মায়ের শারীরিক সংস্পর্শ পেয়েছে, আর যারা ফোনে মায়ের সাথে কথা বলেছে, তাদের সকলেরই প্রায় সমান মাত্রায় মানসিক স্ট্রেসের নিঃসরণ ঘটেছে। এ প্রসঙ্গে গবেষণাপত্রের প্রধান রচয়িতা লেসলি সেলৎজার বলেন,
যেসব বাচ্চারা মায়ের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পেরেছে, হোক তা ফোনে কথা বলে কিংবা সশরীরে উপস্থিত হয়ে, তাদের সকলেরই প্রায় সমান মাত্রার হরমোনাল প্রতিক্রিয়া ছিল। এতদিন আমরা জানতাম সামাজিক সম্পর্কের ভিত্তিতে অক্সিটোসিন বৃদ্ধির জন্য শারীরিক স্পর্শের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমাদের প্রাপ্ত ফলাফলের মাধ্যমে এটি এখন পরিষ্কার যে মায়ের কণ্ঠস্বর আলিঙ্গনের সমতুল্য প্রভাব বিস্তারে সক্ষম।


মায়ের ভূমিকা মানুষের এই জাতীয় সমস্যা নিরাময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একজন মায়ের পক্ষে হাজার মাইল দূরে থেকেও সন্তানের মন ভালো করে দেয়া সম্ভব। ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিনের চাইল্ড ইমোশন ল্যাব থেকে করা গবেষণাটির ফল বলছে, মায়ের আলিঙ্গন সন্তানের মানসিক স্ট্রেস কমাতে যে প্রভাব ফেলে, ফোনের মাধ্যমে শুনতে পাওয়া মায়ের কণ্ঠস্বরেও ঠিক সেরকমই প্রভাব বিদ্যমান। ড.লেন স্ত্রাথার্ন উপরিউক্ত সমস্যাগুলো নিয়ে তার গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন - গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল খুবই শক্তিশালী, মায়ের স্পর্শই শুধু নয়, এমনকি কণ্ঠস্বরও সন্তানের মস্তিষ্কে অক্সিটোসিনের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়ে দিতে সক্ষম।

এই অসাধারণ ব্যাপারটির সত্যতা যাচাই করতে আপনাকে মিনিট পাঁচেকের বেশি ব্যয় করতে হবে না। স্রেফ আপনার মায়ের সাথে কথা বলুন। কিংবা মা যদি ধারেকাছে না থাকেন, তবে তাকে ফোনে একটি কল দিন। এতে করে আপনার স্ট্রেস কমা ও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যাবে।

ionicons-v5-q