Your order.
There are no items in your Cart.
ব্যক্তিত্ব যা মানুষের অভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্য; আচার-আচরণ, চিন্তা-ভাবনা, অনুভূতির সমন্বয়ে প্রত্যেক ব্যক্তিকে করে তোলে অনন্য। এসবের মিশ্রণেই কাউকে আমরা অন্তর্মুখী বা বহির্মুখী, দয়াবান বা নিষ্ঠুর, যত্নবান বা উদাসীন, উদ্বিগ্ন বা ভাবনাহীন ইত্যাদি নামে চিহ্নিত করে থাকি। কিন্তু Personality পরিবর্তনশীল। সময় এবং পরিস্থিতির সাথে মানুষের ব্যক্তিত্বের অবস্থার পরিবর্তন হয়ে ভিন্ন রূপ নিতে পারে। ব্যক্তিত্বের অবস্থা দুজন মানুষের মাঝে এক নয়, ভিন্ন হয়। এবং এর প্রতিফলন শুধু মানসিক বা মনের দিক থেকেই পরিবর্তিত হয়ে ব্যক্তিকে আলাদা করে ব্যাপারটি এমন নয়। শারীরিকভাবেও এর প্রতিফলন হয়ে থাকে। ব্যক্তিত্ব মনোবিজ্ঞানের বেশ জটিল কিন্তু মজার একটি বিষয়। মনোবিজ্ঞানের অনেক আধুনিক এবং ঐতিহ্যগত গবেষণা ব্যক্তিত্বের 5টি মৌলিক মাত্রা নির্দেশ করে। ১৯৪৯ সালে ব্যক্তিত্বের ব্যাপারে একটি থিওরি জনপ্রিয়তা লাভ করে যার নাম - Big Five Theory of Personality.
১৯৪৯ সালে তত্ত্বটি প্রকাশিত হবার পরে এর ব্যাপক বিস্তৃতি পরবর্তী গবেষণায় প্রকাশিত হয় বিভিন্ন গবেষকদের মাধ্যমে। এই গবেষণা থিওরি নির্দেশ করে কিভাবে একজন মানুষ চিন্তা করে, তার আচরণ কেমন, সে কিভাবে অনুভব করে ইত্যাদি। Big Five তত্ত্ব মানুষের বৈশিষ্ট্যকে আলাদা করে আলাদা আলাদা নাম দেয়, যার ফলে আমরা বাকিদের থেকে নিজেদের আলাদা করতে পারি। এটি শুধু বৈশিষ্ট্যই নির্ধারণ করে না, এর মাধ্যমে একজন মানুষের ব্যক্তিত্বের সাথে জীবনের অন্যান্য উপাদানের সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে। সেগুলো হলো -
১- Frankness বা অকপটতা।
২- Conscientiousness বা বিবেক।
৩- Extroversion বা বর্হিমুখীতা।
৪- Agreeableness বা সম্মতি।
৫- Neuroticism বা স্নায়বিকতা।
উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো পড়ে বোঝাই যাচ্ছে ঠিক কি ধরনের অনুমিতির ভিত্তিতে একজন মানুষের ব্যক্তিত্বের বিচার করে Big Five Theory ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
অকপটতার সাথে সামগ্রিকভাবে সুখ এবং ইতিবাচকতার একটি সুন্দর সম্পর্ক আছে। যারা এই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন মানুষ, তাদের মধ্যে একটি চাঞ্চল্য থাকে। এছাড়াও তারা তাদের আশেপাশের লোকজনের সাথে উষ্ণ এবং সম্প্রীতির সম্পর্ক বজায় রাখে। বিবেকবান মানুষেরা সাধারণত সফল হয়। কাজে তৎপর, ভীষণ পরিশ্রমী, লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য নিয়ে সচেতন, দায়িত্বশীল এবং নির্ভরযোগ্য। এই বৈশিষ্ট্যের মানুষ পেশাগত এবং ব্যক্তিজীবনে দায়িত্ব এবং কর্তব্য মেনে চলেন। এদের মাঝে আবেগপ্রবণতা কম দেখা যায়। তারা লক্ষ্য এবং তা কত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে সেই সম্বন্ধেও সচেতন। যারা অনেক সামাজিক, সহজেই সবার সাথে বন্ধুত্ব করতে পারে, অনেক কথা বলতে পারে, এনার্জিতে ভরপুর! তারা মূলত Extrovert বা বহির্মুখী। সবার মতামতের ভিত্তিতে চলে এবং মনোমালিন্য এড়িয়ে চলতে চায় এমন মানুষেরা বেশি বিশ্বাসী, স্নেহশীল, পরোপকারী এবং সাধারণত অন্যদের তুলনায় বেশি সামাজিক আচরণ প্রদর্শন করে। এই সামাজিক বৈশিষ্ট্যের মানুষ সহানুভূতিশীল, অন্যদের কল্যাণের জন্য উদ্বেগ দেখায়, যখন কেউ বিপদে পড়ে তখন তারাই প্রথমে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করে। শেষ যেই বৈশিষ্ট্য দিয়ে Big Five Theory উপসংহারে পৌছেছে সেটা হলো Neuroticism বা স্নায়বিকতা। এই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন মানুষের ভেতরে নেতিবাচক অনুভূতি কাজ করে। এরা সাধারণত বিষণ্নতায় ভোগে। বদমেজাজ এবং মানসিক অস্থিরতায় থাকে। এদের মধ্যে মানসিক ডিজঅর্ডারও পরিলক্ষিত হয়। মুড সুইং, দুশ্চিন্তা, হীনম্মন্যতা, বিরক্তি ইত্যাদি দেখা যায়।
সব শেষে বলা যায় সাধারণত প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে নিজের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং তা নিয়ে নিরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, এর ফলে নিজেকে তো চেনা যায়, সঠিক পেশা বেছে নিতে, অন্যদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে, নিজের শক্তি এবং দুর্বলতা শনাক্ত করতে সাহায্য করে। একজনের মাঝে অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন মাত্রায় থাকতে পারে। কোনোটা বেশি, কোনোটা মাঝারি, কোনোটা আবার একদমই কম। এই পর্যায়ে নিজের ব্যক্তিত্বের একটি পরীক্ষা করে ফেলতে পারেন,তাই নয় কি?
Explore our highly acclaimed publication that has captured the attention of our audience. Stay informed and inspired with Talent Stationary.